“মাননীয় প্রধানমন্ত্রী”,  

ভালোবাসা, কৃতজ্ঞতা, শুভকামনা। আপনি আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর গড়া তাঁর স্বপ্নের আমাদের সোনার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। আমরা স্বপ্ন দেখি, আমাদের জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর এই বিশেষ ক্ষণ(৩১ মার্চ ২০২২) থেকে সম্ভাব্য সব সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ-বয়সসীমা ৭১ বছর হওয়ার।

বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের "প্রিয় বঙ্গবন্ধু" শিরোনামে, বঙ্গবন্ধু-সম্পর্কিত ভাবনা, ভালোবাসা, আবেগের কথা নিয়ে লেখা চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে, আমাদের জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর এই বিশেষ ক্ষণে এই স্বপ্ন দেখার সাহস করা।

এ স্বাধীনতা “সরকারি চাকরির স্বাধীনতা” না, এ স্বাধীনতা "আমাদের প্রত্যেকের স্বপ্নের স্বাধীনতা”। "বঙ্গবন্ধুর এই জন্মশতবার্ষিকী" জড়িয়ে থাকুক “আমাদের জাতির পিতার স্বপ্নের-আমাদের সোনার বাংলা গড়ার স্বাধীনতার" মাঝে।

 

৭১ মানে আমাদের স্বাধীনতা, ৭১ মানে বঙ্গবন্ধু, ৭১ মানে সেই ৭ই মার্চ, ৭১ মানে আমাদের বীরাঙ্গনা, ৭১ মানে আমাদের মুক্তিযোদ্ধা, ৭১ মানে আমাদের সংগ্রাম, ৭১ মানে বিজয়, ৭১ মানে মুক্তি, ৭১ মানে সোনার বাংলা, ৭১ মানে স্বপ্নের স্বাধীনতা, ৭১ মানে আমরা ।  




 

কেন..!! 

১. আমরা প্রত্যেকে (প্রায় সাড়ে ১৬ কোটি মানুষ) আমাদের স্বপ্নপূরণের স্বাধীনতা পাইবো। এই স্বাধীনতা সরকারি চাকরি পাবার স্বাধীনতা না, এই স্বাধীনতা আমাদের প্রত্যেকের স্বপ্নের স্বাধীনতা।


২. সকল মা-বাবা তাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তা মুক্ত হবে। প্রত্যেক মা-বাবা মানসিক ও শারীরিকভাবে সুস্থ ও ভালো থাকবে। জানবে, বঙ্গবন্ধুর এই সোনার বাংলার তার সন্তানের মূল্য ৩০ বছর পর্যন্ত না, ৭১ বছর পর্যন্ত।


৩. এদেশের প্রত্যেক মা-বাবা তার সন্তানকে নিজের স্বপ্ন সফল করার পেছনে ছুটতে বলবে। সন্তানের যা ইচ্ছা, তাই হওয়ার পিছনের ছুটতে বলবে। সরকারি চাকরির পিছনে না।


৪. কৃষক, দিনমজুর, রিক্সাওয়ালা, ভ্যানওয়ালা, গার্মেন্টস কর্মী, ব্যবসায়ী, ছোট চাকরিজীবী, বেসরকারি চাকরিজীবী, সরকারি চাকরিজীবী, সর্বোচ্চ পর্যায়ের আমলা অর্থাৎ কোন কাজকেই কেউ ছোট করে দেখবে না। জানবে, এদের প্রত্যেকেরই সুযোগ আছে নিজেদেরকে প্রমাণ করার, যে কোন কিছু হওয়ার। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ এই সুযোগ ৩০ বছর পর্যন্ত না, ৭১ বছর পর্যন্ত। 


৫. প্রতিযোগিতা না, সহযোগিতার পরিবেশ সৃষ্টি হওয়া। সমাজের সকল মানুষ একে অন্যের সাথে প্রতিযোগিতা না করে, সহযোগিতা করে, নতুন নতুন সৃষ্টি করবে। 


৬. এদেশের গ্রাম ও শহরের নিম্নবিত্ত নারীরাও জীবনের যে কোন বয়সে পুনরায় শিক্ষা গ্রহণ করার সুযোগ ও কারণ খুঁজে পাবে। চাকরি না পাইলেও, সন্তানকে তো সুশিক্ষিত করতে পারবে।

 "তোমরা আমাকে শিক্ষিত মা দাও, আমি তোমাদের শিক্ষিত জাতি দেবো।" _নেপোলিয়ন বোনাপার্ট


৭. সুশিক্ষিত সমাজ সৃষ্টি হবে। সমাজ থেকে কুশিক্ষা দূর হবে। ১৮-৩০ বছরের পরেও মানুষ নিজেকে প্রতিনিয়ত সুশিক্ষিত করবে। "শিক্ষার কোন বয়স নাই", এটা সত্যিকারভাবে আমরা অনুধাবন করব ও সুশিক্ষিত হব। 


৮. মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সমাজ সৃষ্টি হবে। মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনাদের স্বপ্নের সোনার বাংলা হবে। আমাদের জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা হবে। 


৯. সমাজের সর্বস্তর দুর্নীতিমুক্ত হবে। মানুষ সরকারি চাকরি পাবার জন্য দুর্নীতির আশ্রয় নেওয়া থেকে বিরত থাকবে। ঠিক তেমনি, সমাজের সর্বস্তর দুর্নীতিমুক্ত হবে। 


১০. দেশের মেধাপাচার রোধ হইবে। এমনকি, উচ্চশিক্ষিত ও অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়ে ফিরে এসেও দেশকে সেবা করার সুযোগ পাবে। 


১১. "এখন যৌবন যার যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়"। ১৮ থেকে ৩০ বছর বয়সীরা সরকারি চাকরির পিছনে না ছুটে, উদ্যোক্তা হওয়ার পিছনে ছুটবে। সৃষ্টির পিছনে ছুটবে, সোনার বাংলা গড়ার পিছনে ছুটবে, সমস্যা সমাধানের পিছনে ছুটবে। 


১২. উদ্যোক্তা, ফ্রিল্যান্সিং, আইটি সেক্টর , কন্টেন্ট ক্রিয়েশনসহ সকল ক্রিয়েটিভ ক্ষেত্রে তরুণ-তরুণীরা মন-প্রাণ দিয়া কাজ করতে পারবে। যেহেতু সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৭১ বছর হবে, তাই সরকারি চাকরি হাতছাড়া হওয়ার কোনো সুযোগ নাই! তাই তাদের কোন প্রকার পিছুটানও থাকবে না!


১৩. কৃষি খামার, মৎস্য খামার, পশু খামার, বিদেশি ফলমূল (স্ট্রবেরি, ড্রাগন ফল, কমলা, মালটা অন্যান্য) চাষের ক্ষেত্রে বিপ্লবিক পরিবর্তন আসবে। তরুণ-তরুণীরা তাদের তারুণ্যে কৃষি ও খামারে  বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে কাজ করবে। 


১৪. ছেলে-মেয়েদের সম্পর্ক ও বিয়ের ক্ষেত্রে বাধা দূর হবে। সরকারি চাকরির না পাইলে বিয়ে নয়, এই ধারণা থেকে সমাজ মুক্ত হইবে।


১৫। প্রবাসী আয় ও রিজার্ভের বৈপ্লবিক উত্থান ঘটবে।  ছাত্র-ছাত্রী ও তরুণ তরুণীরা তাদের তারুণ্যে অর্থনৈতিক স্বাধীনতার পিছনে ছুটবে। সরকারি চাকরির পিছনে না।


১৬। “ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি হওয়ার পথে বাংলাদেশ”- প্রথম আলো (০৫ ডিসেম্বর ২০২২)। ২০৪০-২০৩০ এর অনেক আগে বাংলাদেশের অর্থনীতি ট্রিলিয়ন ডলারের মাইলফলক স্পর্শ করবে।(প্রতিবেদনে: বৈশ্বিক ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান বোস্টন কনসাল্টিং গ্রুপ (বিসিজি) ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়)। আমাদের প্রবৃদ্ধি বর্তমানের ৬.৪% এর চেয়ে সর্বনিম্ন দ্বিগুণ-তিনগুণ বাড়বে এবং আগামী দিনগুলোতে তা ১২.৮% থেকে ১৯.২% এর কাছাকাছি হবে। স্মার্ট বাংলাদেশ আইসিটি ২০৪১ ও প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০২১-২০৪১ আমরা অর্জন করতে পারব।   


১৭. সারা পৃথিবী দেখবে আমাদের জাতির পিতার স্বপ্নের আমাদের সোনার বাংলাদেশকে..!! 



কিভাবে সম্ভব..!!

১। "সম্ভাব্য সব সরকারি চাকরিতেবিচার প্রবেশের সর্বোচ্চ-বয়সসীমা আমাদের জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী (৩১ মার্চ ২০২২) থেকে ৭১ বছর করা।" (যেমনঃ শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ব্যাংক, অফিশিয়ালসহ সম্ভাব্য সব সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সুযোগের কথা বলা হচ্ছে। সংবিধান দ্বারা সৃষ্ট কোন চাকরি বা পদ, বিচার-কর্ম বিভাগ, প্রতিরক্ষা-কর্ম বিভাগ ও বিশেষ সব সরকারি চাকরিতে নয়। (সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮, ধারা ১।(৩))।

২। "সাধারণ অবসরকালীন বয়স বর্তমানের ৫৯ বছরই রাখা, কিন্তু ৫৫ বছর বা তার বেশি বয়সে কেউ চাকরি শুরু করলে তার অবসরকালীন বয়স চাকরি শুরুর পর ৫ বছর করা যা সর্বোচ্চ একবারের জন্য প্রযোজ্য হবে।" (বর্তমানে প্রযোজ্য বিশেষ-বিশেষ ক্ষেত্রে অবসরকালীন বয়স ভিন্ন-ভিন্ন রইলো এবং নীতিমালা অনুসারে পেনশনের জন্যও যোগ্য বলে বিবেচিত হইলো ( সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮, ধারা ১।(৩)) ।


“মাননীয় প্রধানমন্ত্রী”,

তাই, আপনার নিকট আমাদের বিনীত নিবেদন, উল্লেখিত দুইটা দাবি বিবেচনা করে, সম্ভাব্য সব সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ-বয়সসীমা আমাদের জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী (৩১ মার্চ ২০২২) থেকে ৭১ বছর করার বিহীত ব্যবস্থা গ্রহণ করে আমাদের বাধিত করবেন ।

কৃতজ্ঞতা, ভালোবাসা, শুভকামনা । 



জয় বাংলা 

জয় বঙ্গবন্ধু 

বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।